Posts

Showing posts from October, 2018

পুণ্ড্রের পাঁচালী - ৫ (এক অনিঃশেষ পুরাকীর্তির কথা )

Image
পুণ্ড্রের পাঁচালী - ৫ (এক অনিঃশেষ পুরাকীর্তির কথা ) সাজেদুর রহমান বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর এলাকার  ঐতিহ্যবাহী  ‘ ভীমের জাঙ্গাল ’  কেটে নেওয়া স্থান। কারণ সামান্যই। সামান্য কারণেই শ্যামপুর গ্রামে একটা বিপর্যয় ঘটে গেলো। এই গ্রামের মাটি বিক্রেতা মোতালেব হোসেন শব্দগ্রামের মাটি ব্যাবসায়ি ইন্দাস আলী যোগসাজশে করে মহাস্থানের অন্যতম পুরাক্রিত্তি ‘ ভীমের জাঙ্গাল ’ কেটেকুটে পাঁচটি ইটভাটায় মাটির জোগান দিচ্ছে। প্রতি ট্রাক মাত্র ১৫০ টাকায়। নিরিবিলি এলাকায় খুব ভোরে শুরু করে ৬০/৭০ জন শ্রমিক লাগিয়ে দিয়ে জাঙ্গালের মাটি কাটার কাজটি সকাল ৯/১০ টার মধ্যে শেষ করে ফেলে। এতে গ্রামের লোকে দের নজরে কম আসত। ইটভাটা গুলি ছিল জনবসতির খুব কাছে। সেগুলি যখন চালু হোল তখন তার ধোঁয়ায় এলাকার লোকে রা চরম দুর্ভগে পড়ল। বিশেষ করে ভাটার কাছাকাছি থাকা চারটি স্কুল ও একটি কলেজের শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হতে লাগলো খুব বেশি।                                 হাজার বছরের পুরাক্রিত্তিটি মহাস্থান গড় থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে দিনের পর দিন এমন ঘটনা ঘটে চললেও প্রশাসন নাকি টেরই পায়নি। এলাকার মানুষের নাকের ডগা

মহাস্থান কাহিনী -১০

Image
মহাস্থান কাহিনী -১০ মহাস্থন জাদুঘর মহাস্থনের জাদুঘর তেমন সমৃদ্ধ না। নমুনা রূপে কিছু ভাস্কর্য, মূর্তি, মৃৎপাত্র, গহনা প্রভৃতি রাখা। এখন পর্যন্ত প্রত্ননুস্নদ্ধানীরা মহাস্থানে ১৭ টি স্তরের ১২ টি নির্মাণ তলে পাওয়া প্রত্ন বস্তুর সামান্যই প্রদর্শিত হচ্ছে। মহাস্থানে আবিস্কিরিত কুমারি মূর্তি, সূর্য পট্রয়, মাতৃকা মূর্তিসহ অন্যান্য প্রত্নবস্তু বিশ্লেশনে মনে হয় কারিগররা ভাস্কর্য তোয়রিতে নদী বাহিত ধ্যান দৃষ্টি দিয়েছিল। বলতে হয় এখানকার ইতিহাস জলের চলার গভীর নিমগ্নতার ইতিহাস। রবীন্দ্রনাথ রাজপথের কথা বলছেন,‘অরুণ চরণগুলি এমন কঠিন ধরণির উপর চলে কেন। কিন্তু তা যদি চলিত তবে বোধকরি করি কোথাও শ্যামল ত্রিণ জমিত না।‘      ঘুমন্ত নগরীর নিমগ্নতার ইতিহাস প্রথম উন্মচন গত শতাব্দীর শুরুতে । যেন হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে কিছু মানুষ আবিষ্কার করছে পুণ্ড্র নামের আড়াই হাজার প্রাচীন এক জনপদের । ঘাস-গাছে সবুজাচ্ছিত ঘুমন্ত নগরী।

পুণ্ড্রের পাঁচালী -৪ (কীচক কাহিনি )

Image
পুণ্ড্রের পাঁচালী -৪ (কীচক কাহিনি ) সাজেদুর রহমান  সেই সময়ের সমাজ চিত্র  গল্পটা পাঁচ হাজার বছর আগের। পুণ্ড্র নগরের উত্তরপূর্বে নিভৃত অরণ্য বেষ্টিত মৎস্য নামে একটা দেশ ছিল। সেই দেশের রাজা বিরাটের অগাধ ধনসম্পদ ছিল। সম্পদের মধ্যা ৬০ হাজার গাভীর বিসাল খামার ছিল। বিশাল এই গোসম্পদ রক্ষায় বড় হুমকি ছিল দস্যুদের হামালা। ডাকাত দোল যখনতখন গোধন লুট করে নিয়ে যাচ্ছিল। রাজা জানতে পারালেন সুশরমার রাজা ত্রিগর্তরাজ ঝামেলাটা করছে। তিনি শ্যালক কীচককে সাথে নিয়ে ত্রিগর্তরাজকে আক্রমণ করলেন। কীচকের দুঃসাহসিকতায় সহজেই পরাজিত করেন। ত্রিগর্তরাজা পালিয়ে দুর্যোধনের কাছে আশ্রয় নিয়ে প্রাণ বাঁচায়। রাজা বিরাট কীচককে সেনাপ্রধান নিযুক্ত করেন। কীচকের দস্যুদমনের সেই শৌর্য শক্তি দিন দিন বাড়তে থাকে। অবস্থা এমন দাঁড়ায় রাজা ইদানিং কীচকের কোন ব্যাপারে কিছু বলে না।    সেই করতোয়া এই করতোয়া   এদিকে পঞ্চপাণ্ডব ১২ বছরের বনবাস যাপন এবং এক বছর অজ্ঞাত বাসের সময়কালে বিরাট রাজার দরবারে নিল। এক্ষেত্রে পাঁচ সদর নিজেদের নাম পরিচয় গোপন করেছিলেন। যুধিষ্ঠি কঙ্ক নামে সভাসদ, ভীম বল্লভ নামে পাচক, অর্জুন বৃহন্নলা নাম

মহাস্থান কাহিনী -৯ পোস্ট

Image
মহাস্থান কাহিনী -৯ পোস্ট জিওয়ন কুণ্ড গোমাংস জিওয় কুণ্ডের পানিতে পরাই পানি অপবিত্র হয়। এতে কুণ্ডের পুনরজ্জীবীত করার ক্ষমতা হারায় । রাজা পরশুরামের পরাজিত হয় আর তার বোন শিলাদেবি প্রমত্ত করতোয়ায় ঝাপ দিয়ে আত্নহত্তা করেন। সেই থেক মহাস্থানে ইসলাম কায়েম হয়। শিলাদেবির ঘাট  রাজা পরশুরামের বোন শিলাদেবির করতোয়া নদীর যেস্থানটিতে আত্মহত্যা করেছিলেন সেটি এখন শিলাদাবির ঘাট। আজ সেখানে সনাতন ধর্ম্যাবলিম্বরা মহাসিমারহে পূজা-মেলা করা। খোদার পাথর ভিটা মেলায় আশা দর্শনার্থীরা রাজা পরশুরামের জিওত কুণ্ড, পরশুরামের প্রাসাদ,শিলাদাবির ঘাট দেখে আর দেখে মীর শাহা সুলতান মাহী সওয়ার বলখীর মাজার। মাজারের ১০/১৫ কিলোমিটারের মধ্যে গবিন্দ ভিটা, বইরাগী ভিটা, মানকালীর কুণ্ড, নরসিংহের (নরপতির) ধাপ, মুনির ঘন, কানছ কূপ, তাম্র দ্বার (পশ্চিমে তাম্র দুয়ার), বুড়ির ফটক (দক্ষিণ প্রাচিরে দরোজা), পদ্ম দেবীর বাড়িতে যাওয়ার দুয়ার (উত্তর ও মদ্ধের কাটা দুয়ার) ও জাদুঘর।  

মহাস্থান কাহিনী -৮

Image
মহাস্থান কাহিনী -৮   খানিকটা সত্য, অনেকটা কল্পনা মিলে কালকে জয় করে টিকে থাকা কাহিনী মিথ। সে হিসেবে মহাস্থানের কালজয়ী উপাখ্যান বেহুলা লখিন্দরের কাহিনীকে মিথ বলা কি যায়? তবে পরশুরাম ও মাহী সওয়ার বলখীর ধর্ম যুদ্ধ নিয়ে যে কাহিনী তাকে মিথ বলা চলে। মাছের পিঠে চড়ে করতোয়া পারী দিয়ে আসা ইসলাম প্রচারক শাহা সুলতান বলখীর সাথে যুদ্ধ হয় রাজা পরশুরামের। দেব-আনুকূল্য পাওয়া পরশুরাম এযুদ্ধে মৃত যোদ্ধাদের জিওত কুণ্ডের(কূপ)পানিতে ফেলে জীবন্ত করে আবার যুদ্ধে পাঁঠাতে থাকে ।   এতে শাহা সুলতান বলখীর দল পরাজয়ের আশঙ্কায়া পরে। ঠিক তখন আল্লাহর ওলি বলখী অলোকিক ক্ষমতা দেখালেন। তিনি কাকাকে নির্দেশ দিলেন, এক টুকরো গোমাংস জিওত কুণ্ডের পানিতে ফেলে আসার।

পুণ্ড্রের পাঁচালী -৩ (বাংলার পিরামিড)

Image
পুণ্ড্রের পাঁচালী -৩ (বাংলার পিরামিড) সাজেদুর রহমান ভূমি থেকে প্রায় ৫০ ফুট উচু ১৭২টি ভরাট করা কক্ষসহ  অনেকটা কচ্ছপের পিটের মত এই ইমারত  ‘এটাকে বাংলার পিরামিড বলতে পারেন!’ কথাটা অভিজ্ঞ প্রত্নতাত্ত্বিকের মতো ভঙ্গিতে বলল মেয়েটা। কালো ছিপছিপে গড়নের বয়কাট চুল। মেয়েটাকে দেখে মনে হোল সদ্য স্কুল পেরোনো কিশোরী। এই বয়সী ছেলেমেয়েদের সভাব বড়দের মতো কথা বলে বুঝিয়ে দেয়, আমরা আর ছোট নই।    ছোট মুখে বড় কথা। পাত্তা না দিলেই হয়। আমি পাত্তা দিলাম না। বেহুলার বাসর ঘর খ্যাত গোকূল মেধটাকে দেখতে লাগলাম। পোড়ামাটির ইটে বানান এই পুরাকীর্তির কাছে যতবার এসেছি ততবারই ঘন্টার পর ঘণ্টা তাকিয়ে থেকেছি। অদ্ভুত ব্যাপার এই কাঠামোর সামনে দাঁড়ালেই গুপ্ত - পাল - সেন - সুলতানি আমলের ছবি ভেসে ওঠে। এখানকার কুঠরিতে বসে কতশত বৌদ্ধ মুনি ধ্যান করেছে। ষড়রিপু দমন করছেন,   যেন অহংকার বা মোহ দ্বারা আক্রান্ত না হয়। তবে আমি আক্রান্ত হলাম। কারণ মেয়েটা আমার পাসেই দাঁড়িয়ে আছে। খানিকটা বিরক্ত নিয়ে মেয়েটার দিকে না তাকিয়ে বললাম, গোকূল মেধকে কোন অর্থে এটা পিরামিড বলা যায়? ঃ এই স্ট্রাকচারটা অনেকটা সাউথ আমেরিকার ই